Crimer Sondhane

যাত্রাবাড়ী থানার পাশে রমরমা রাস্তার উপর ফলবাজার: প্রশাসনের নীরবতা না স্বার্থের ছায়া?”

ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র যাত্রাবাড়ী। আধুনিক শহরায়নের প্রতীক হিসেবে এখানে গড়ে উঠেছে ফ্লাইওভার,সবুজ পার্ক, বসার জায়গা—সবই যেন নাগরিক সৌন্দর্য ও স্বস্তির বার্তা দেয়। কিন্তু ঠিক এই সৌন্দর্যের মাঝেই বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে এক বিশৃঙ্খল, অনিয়ন্ত্রিত, অথচ ‘স্থায়ী’ হয়ে যাওয়া ফলবাজার—যা থানার একেবারে নাকের ডগায় বসে চলছে দিনের পর দিন।

● প্রশাসনের দৃষ্টির সামনেই নৈরাজ্য!
ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, যাত্রাবাড়ী থানার অদূরে আধুনিক পার্কের পাশে গড়ে উঠেছে রাস্তার উপর অবৈধভাবে ফলের বাজার। নোংরা পরিবেশ, দুর্গন্ধময় স্যাঁতসেঁতে মাটি, রাসায়নিকযুক্ত ফল আর মাথার উপর ঝুলে থাকা লাল-নীল ত্রিপল—সব মিলিয়ে এটি আর সাময়িক বাজার নয়, বরং রীতিমতো দখলদারি ব্যবসা। পায়ে হাঁটা দায়, রাস্তা সরু হয়ে গেছে, আর যানবাহন চলাচল তো কষ্টকর উপক্রম।

এই অবস্থা দেখে একজন সচেতন নাগরিক প্রশ্ন করতেই পারেন—”এত কাছে থানা থাকার পরেও কেন এই চরম বিশৃঙ্খলা? প্রশাসন কি অন্ধ, না ইচ্ছাকৃত নীরব?”

● অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে অস্বস্তিকর তথ্য:
আমাদের প্রতিবেদক অনুসন্ধানে নামলে দেখা যায়, এই বাজারের ব্যবসায়ীরা মুখ খুলতে ভয় পান। অনেকে বলেন—

“আমরা চাঁদা দিই। কে নেয় তা বলতে পারি না। বললে বিপদ হবে।”
কেউ বলেন, “উপরের নির্দেশ আছে।” অথচ কাগজপত্র নেই, ইজারা নেই, বাজার পরিচালনার কোনো নিয়ম বা সুনির্দিষ্ট জায়গা নেই। এ যেন এক ‘অদৃশ্য চুক্তির রাজত্ব’, যেখানে প্রশাসনের নীরবতাই মূল প্রশ্রয়।

● শহরের সৌন্দর্যের পাশে অনিয়মের রাজত্ব:
যে স্থানে পরিবার নিয়ে হেঁটে বেড়ানোর কথা, সেই জায়গা হয়ে উঠেছে অপরিকল্পিত ও বিশৃঙ্খল বাজার এলাকা।
সবুজ পার্কের পাশে এমন বাজার জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। রাসায়নিক ফরমালিন মেশানো ফল, অপরিষ্কার পরিবেশ, আর ধুলাবালিময় চারপাশ—এই জায়গায় প্রতিদিন শত শত মানুষ, এমনকি শিশুরাও চলাফেরা করে।

● প্রশাসন নীরব কেন?
প্রশ্ন জাগে—এই বাজারটি চালাতে কি কেউ পেছন থেকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে? থানার এত কাছাকাছি এমন বেপরোয়া ব্যবসা কীভাবে সম্ভব? কেউ কি উপরে কমিশন পায়? চাঁদার ভাগ কোথায় যায়?

● নাগরিকের প্রশ্ন:
শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে রাস্তা দখল করে বাজার কাদের ইঙ্গিতে চলছে?
কাদের ছত্রছায়ায় প্রশাসন নিশ্চুপ?
এই বাজার কি সাধারণ ব্যবসা, না কি এক প্রভাবশালী চক্রের আয় উপার্জনের কৌশল?
শিশু ও নারীদের চলাচলে এমন ভোগান্তি কেন?
রাসায়নিক ও স্বাস্থ্যহানিকর ফলের বাজার বন্ধে কোন কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসবে?
● উপসংহার:
একদিকে সৌন্দর্য, অন্যদিকে বিশৃঙ্খলা—এই দুই বিপরীত চিত্র আজ একসাথে বাস করছে যাত্রাবাড়ীতে।
প্রশাসন চাইলেই ব্যবস্থা নিতে পারে। চাইলে একদিনেই সরানো সম্ভব এই অবৈধ বাজার। কিন্তু তারা চায় না। কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে নাগরিক সমাজ।

এই বাস্তবতা কেবল যাত্রাবাড়ীর নয়, বরং গোটা শহরের বুকে গজিয়ে ওঠা ‘প্রশাসনিক নীরবতার প্রতীক’।
জনগণ জানতে চায়—এই নৈরাজ্যের শিকড় কোথায়? কারা দায়ী? আর সবচেয়ে বড় কথা—এই অনিয়মের শেষ কোথায়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *