
দেশে নারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও এখনো ক্ষমতার কাঠামো এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গা থেকে দূরে রাখা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। তারা বলেন, স্বৈরাচার পতনের পর সরকার পরিবর্তন হলেও নারী–পুরুষ সম–অধিকারের প্রশ্নে চিন্তার পরিবর্তন হয়নি।
রোববার (২৪ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র আয়োজিত নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে সেমিনারে এ মন্তব্য করা হয়।
সেমিনারে বক্তারা সংসদে ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতদের বিচার এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার দাবি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, “নারীরা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানেও প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু প্রতিটি আন্দোলনের পরই তাদেরকে পুরোনো জায়গায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকা নারীদের এখন পরিকল্পিতভাবে সাইবার বুলিং ও মিথ্যা প্রচারণার শিকার হতে হচ্ছে।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “নারীর সম–অধিকারের দাবি শুধু নারীর নয়, পুরুষকেও এটি তুলতে হবে।” তিনি বিচার ব্যবস্থার অসংবেদনশীলতার সমালোচনা করে বলেন, ধর্ষণের মামলায় অনেক বিচারক ভুক্তভোগীদের আপসের পরামর্শ দিচ্ছেন, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, “স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে নারীরা বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু নির্বাচনে সরাসরি অংশ নিতে চাইলে এখনো তাদের অযোগ্য ভাবা হয়। রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন না হলে নারীরা কখনোই ন্যায্য অধিকার পাবে না।”
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন আইনজীবী আবেদা গুলরুখ, স্থপতি ফারহানা শারমিন, শিক্ষার্থী সুলতানা, পূজা রানী ও সাহিদা বেগম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সীমা দত্ত এবং প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের অর্থ সম্পাদক তৌফিকা দেওয়ান।
১৯৯৫ সালের এ দিনে দিনাজপুরে ইয়াসমিন হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনের সময় সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনার স্মরণে দিনটিকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।