
ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা যাত্রাবাড়ীর মোড়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে অবৈধ বাহাদুরশাহ পরিবহন স্ট্যান্ড। শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও যাত্রী চলাচল করলেও জনজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি উপেক্ষা করেই গড়ে উঠেছে এই স্ট্যান্ড।
অর্ধকোটি টাকার চাঁদাবাজি
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রতিটি গাড়ি থেকে ৩০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়। মাস শেষে এই চাঁদার অঙ্ক দাঁড়ায় কয়েক লাখ টাকা, আর বছরে অর্ধকোটি টাকারও বেশি। অথচ এই বিপুল অঙ্কের টাকা কোথায় যাচ্ছে—সে বিষয়ে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই।
বক্কর বাহিনীর দখলদারিত্ব
অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি শ্রমিক দলের প্রভাবশালী নেতা বক্কর এই অবৈধ স্ট্যান্ড পরিচালনা করছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৮ থেকে ১০টি মামলার রেকর্ড। স্থানীয়দের দাবি—বক্করের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছে, আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব দর্শক হয়ে আছে।
বক্করের নিয়ন্ত্রণে চলা এই স্ট্যান্ডে যেসব গাড়ি চলাচল করে, তার অধিকাংশেরই ফিটনেস সনদ নেই, চালকদের নেই বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। তারপরও বছরের পর বছর গায়ের জোরে এই অবৈধ গাড়ি রাস্তায় চলাচল করছে, যা প্রতিদিনই দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার দৈনিক রূপবাণীসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে—প্রশাসন কি ইচ্ছাকৃতভাবে নীরব, নাকি এর পেছনে রয়েছে প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশ?
সাংবাদিকের ওপর হুমকি
এই অবৈধ চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার পর থেকেই বিপাকে পড়েছেন দৈনিক রূপবাণীর সহযোগী সম্পাদক সাংবাদিক ফয়সাল মাহমুদ। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী নেতা বক্কর বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন করে নিয়মিতভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। স্থানীয়রাও বলছেন, সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মূলত সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
জনমনে ক্ষোভ
যাত্রাবাড়ীর সাধারণ মানুষের দাবি—
“আমরা প্রতিদিন যানজটে ভুগি, দুর্ঘটনায় পড়ি। এখন সাংবাদিকদেরকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ প্রশাসন চুপচাপ। তাহলে কি এই চক্রের হাত এতটাই দীর্ঘ যে কেউ কিছু বলতে পারবে না?”
শেষ প্রশ্ন
-
যাত্রাবাড়ীর মানুষ আজ প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে আছে। অবৈধ বাহাদুরশাহ পরিবহন স্ট্যান্ড কি বন্ধ হবে? নাকি বক্কর বাহিনীর ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস এভাবেই চলতে থাকবে?